আজ রবিবার, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অধিক মুনাফার লোভে পরিকল্পিতভাবে চাল ও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে সংঘবদ্ধ চক্র


অনলাইন ডেস্ক : কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক মুনাফার লোভে পরিকল্পিতভাবে চাল ও পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন দাম বাড়াচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। পণ্য দুটির আমদানি, মজুদ ও সরবরাহ পর্যায়ে কোনো ঘাটতি নেই। রাজশাহী অঞ্চলের কিছুসংখ্যক চালকল মালিক চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে ভরা মৌসুমেও চালের দাম অব্যাহতভাবে বাড়ছে।

আর বাজারে উঠতে শুরু করেছে নতুন পেঁয়াজ, পাশাপাশি আমদানিও হচ্ছে প্রয়োজনীয় পরিমাণ। রাজধানীসহ সারা দেশের পাইকারি বাজার ও আড়াতে পেঁয়াজের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। তারপরও কৃত্রিম সংকটের কথা বলে দাম বাড়ানো হচ্ছে। সারা দেশের চাল ও পেঁয়াজের শতাধিক ব্যবসায়ী এই সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য।

এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অনুসন্ধান প্রতিবেদনেই সংঘবদ্ধ চক্রের কারসাজির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ওসব প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সূত্র জানায়, বাজাওে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। মূলত আমদানি ব্যয় বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সেজন্য তাদের প্রতি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

দেশে বছওে পেঁয়াজের চাহিদা ২০ থেকে ২২ লাখ টন। তার মধ্যে দেশেই উৎপাদিত হয় ১০ লাখ টনের ওপরে। আর আমদানি করতে ১০ লাখ টনের মতো। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ৭ লাখ ৯০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হয়েছে। তার বিপরীতে নিষ্পত্তি হয়েছে ৭ লাখ ৬ হাজার টনের এলসি। আর দেশে উৎপাদিত হয়েছে কমবেশি ১০ লাখ টন।

তাছাড়া মৌসুমের শুরুতেই নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু করেছে। এমনকি সরকারি-বেসরকারিভাবে বর্তমানে ৫ লাখ টনের মতো দেশি পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। ফলে দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। অসৎ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণেই বাজার অস্থির হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, গত কয়েক দিনে নতুন করে চালের দাম বাড়েনি। তবে আগের বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। ফলে মোটা চালও এখন নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে। চালের বাজারের এই অস্থিরতার জন্য সরাসরি দায়ী বড় অটো রাইস মিল মালিকরা। একইভাবে চালের সবচেয়ে বড় মোকাম হিসেবে পরিচিত নওগাঁ, রাজশাহী অঞ্চলের বড় অটো রাইস মিল মালিকদের সিন্ডিকেটই চালের বাজার অস্থির করে তুলেছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত খাদ্যশস্যের সরকারি গুদামজাতকৃত মোট মজুদ ৫ লাখ ৯৭ হাজার টন। তার মধ্যে চাল ৩ লাখ ৮১ হাজার টন এবং গম ২ লাখ ১৬ লাখ টন। তাছাড়া বন্দরে ভাসমান অবস্থায় ১ লাখ ২৩ হাজার টন খাদ্যশস্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। তার বাইরে বেসরকারি পর্যায়ে অন্তত আরো ৫ লাখ টন চাল মজুদ রয়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের কোনো সংকট নেই।

এদিকে পাইকারি বাজারে ধীরে ধীরে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে কেজিতে পাঁচ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, যা এক দিন আগে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। কিন্তু দেশি পিয়াজের দাম পাইকারি ও খুচরা কোনো বাজারেই কমছে না। দেশে পিয়াজের কোনো সংকট নেই এবং উৎপাদন ভালো হয়েছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। আমদানি পরিস্থিতিও ভালো। ফলে দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ